জ্ঞানের একপেশে প্রয়োগ

by anonymous | Published on November 4, 2024

জ্ঞানী মানুষদের জ্ঞানটাই অনেকসময় বড় অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়। তারা তাদের ওই জ্ঞানের ভারে জ্ঞানকে অতিক্রম করে নতুন জ্ঞান সহজে অর্জন করতে পারে না। এমন কয়েকটা উদাহরণ দিচ্ছি, একজন বিজ্ঞানী মনে করতে পারে সব বিজ্ঞান দিয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া সম্ভব, গণতন্ত্রে বিশ্বাসী একজন মনে করতে পারে, মানুষের বাকস্বাধীনতার অধিকার দেওয়াটাই সবচেয়ে বড় অধিকার, তাই সবখানে সব আলোচনাতেই সে কোনোভাবে এটাকে ইঞ্জেক্ট করবেই, একজন ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি মনে করতে পারে, জীবনে যাই করি, সবকিছুই ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে যাচাই করে নিতেই হবে। এগুলো হলো এক্সট্রিম কেইস, যখন ইনারা ইনাদের জ্ঞানের ভারে নিজেরাই আটকা পরে গেসেন, এর বাইরে আর দেখতে পারতেসেন না, এমনকি যেটা তার স্পেশালাইজড টপিক দিয়ে ব্যাখ্যা করা যাবে না, সেখানেও সেটা আনার চেষ্টা করেন। এমন না যে উনারা ভুল, কিন্তু উনারা সবকিছুতেই জ্ঞান প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে নিজেকেই চুপসে ফেলেন।

ধর, একজন ব্যক্তির এটা বিশ্বাস যে, ইশ্বরকে পেতে হলে তাকে রাতদিন ইবাদত বা প্রার্থনা করতে হবে। তখন থেকে সে খাওয়া ঘুম এসব অপরিহার্য বিষয় বাদে শুধু একটা কাজই করে, রাতদিন প্রার্থনা করে, স্রষ্টাকে স্মরণ করে। আমি মনে করি এমনটা হতে পারে: স্রষ্টা বলবে, হায়রে বোকা, আমাকে চাস বলে সারাদিন আমাকেই যে জপলি, কিছুক্ষণ তো পারতি বাইরে বের হয়ে আমার সৃষ্টি করা দুনিয়াটা দেখতে, পারতি তোর ছেলেটার সাথে একটু খেলা করতে, পারতি একটু আজকের খবরের কাগজটা পড়ে দেখতে, পারতি একটু যেখানে স্রষ্টার কোনো চর্চা হয় না, সেখানে আসলে কি হয় সেটা একটু ঘুরে দেখতে। হয়তো এসবে আমাকে অন্যভাবেও তুই আবিষ্কার করতে পারতি।

এইসব আলোচনার সারবস্তু হলো, জ্ঞানার্জনের সময়ও নিজের মনকে উন্মুক্ত রাখা, জীবনের প্রতি নম্র দৃষ্টিভঙ্গি রাখা। সবকিছুর প্রতি খুবই সিরিয়াস, কাঠখোট্টা, বাক্সবন্দী দৃষ্টিভঙ্গি না রেখে, বা আদর্শের বেড়াজালে কড়াভাবে বন্দী না থেকে, একটু ঢিলেঢালা পোশাকে থেকে জগতকে দেখতে হবে, বুঝতে হবে।

Comments

No comments yet.